হাতঘড়ি এবং একটা কাকতালীয় ব্যাপার!
আর্গুমেন্টস অব আরজু বইটি শুরু আরজুর ঘড়ি পরার গল্প দিয়ে। আরজুর মা আরজুকে ঘড়ি পার্সেল পাঠান, যাতে সময়মতো মা’কে আরজু ফোন দিতে পারে।
মাসখানেক আগে সেন্ট্রাল মসজিদে আসরের নামাজ পড়ার সময় অজু করতে গিয়ে আমার ঘড়িটা ভুলে অজুখানায় রেখে আসি। নামাজ শেষে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের দিকে আসার পর মনে হলো, ঘড়ি তো আমি ফেলে আসছি।
দৌঁড়ে গেলাম অজুখানায়। গিয়ে দেখলাম ঘড়িটা নাই!
হয়তোবা কেউ মসজিদের ভেতর নিয়ে গেছেন, কেউ খুঁজতে আসলে দিয়ে দেবেন এরকমও হতে পারে।
কোনোকিছু হারিয়ে গেলে আমার প্রচন্ড খারাপ লাগে, আর সেটা যদি শখের জিনিস হয় (যেমন: বই, ঘড়ি, নোটখাতা) তাহলে তো কান্না করতাম। ছোটবেলায় অনেকবার ক্রিকেট খেলার বল হারিয়ে বাসায় এসে কান্না করতাম। কেউ আরেকটা বল দিলেও কাজ হতো না, ঐ আগের বলের জন্য মন খারাপ করে বসে থাকতাম।
ঘড়িটা যেদিন হারাই, ঐদিন রাতে আম্মুর সাথে ফোনে কথা বলার সময় আমার মন খারাপের কারণ জিজ্ঞেস করলে ‘না বলতে’ চেয়েছিলাম কিন্ত জোরাজুরি করার ফলে বলে ফেললাম, “আমার ঘড়িটি হারিয়ে ফেলেছি।”
সপ্তাহখানেক আগে আম্মু ফোন দিয়ে বললেন, “পার্সেল করে এরকম শখের জিনিস পাঠানো তিনি নিরাপদ মনে করছেন না, তাই একটা ঘড়ি তিনি আমার গ্রামের এক ভাই ঢাকায় আসবেন, উনার সাথে পাঠিয়েছেন। আমি সময় পেলে ঘড়িটা নিয়ে আসি যেনো!”
আম্মু ঘড়ি পাঠিয়েছেন, এটা কোনো আশ্চর্যের কথা না, আশ্চর্যের কথা হলো আমার গল্পের প্রথম গল্পের সাথে বাস্তবতা এরকমভাবে মিলে যাবে সেটা আমি চিন্তাও করিনি।
ঘড়িটি আম্মু কিভাবে, কোথা থেকে ফোন দিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছেন সেই কাহিনী বলছিনা (এতে মায়ের কষ্ট করে ঘড়ি সংগ্রহের ব্যাপারের চেয়ে আমার ব্রান্ড পছন্দ করার বিষয়টা বেশি নজরে পড়বে)।
মায়েদের এমন ভালোবাসা আছে বলেই হয়তো এই ধূলোবালির পৃথিবীতে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট এতোটা হয়না, যতোটা হবার কথা।
#গল্প_হলেও_সত্যি
Tarique Anowar –
Good book
Tarique Anowar –