Dark Light
-25%

দাজ্জাল : কুর’আন ও ইতিহাসের সূচনা

Availability:

10 in stock


বইয়ের নামঃ দাজ্জাল, কুর’আন ও ইতিহাসের সূচনা
মূল লেখকঃ শায়খ ইমরান নযর হোসেন
অনুবাদঃ ইমদাদ খান
সম্পাদনাঃ মুহাম্মদ আলমগীর
প্রকাশনায়ঃ মুসলিম ভিলেজ

293.00 390.00

10 in stock

Compare

বই নিয়ে কিছু কথাঃ

১ [জেরুজালেম, খ্রিস্টপূর্ব]

নবী সোলায়মান তাঁর সিংহাসনে একটি ‘জাসাদ’কে পড়ে থাকতে দেখেন এবং এটা দ্বারা আল্লাহ তাঁকে পরীক্ষা করেন এবং তিনি ভীত হয়ে বলেন, প্রভু আমাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে এমন সা¤্রাজ্য দান করো, যেমনটা আমার পরে আর কেউ পেতে পারবে না।
নবী সোলায়মানের এই প্রার্থনা আল্লাহ কবুল করেন।

খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৭ সনে, বুখতা-নাসারের নেতৃত্বে ব্যবিলনীয় এক বাহিনী জেরুজালেম অবরোধ করে, তারপর শহরটি পুড়িয়ে দেয়, এর অধিবাসীদের হত্যা করে, সোলায়মান (আ.) কর্তৃক তৈরি করা মসজিদ ধ্বংস ক’রে দেয় এবং ইহুদি জনসংখ্যার উৎকৃষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অংশকে ক্রীতদাস হিসেবে ব্যবিলনে নিয়ে যায়।
বনি ইসরাইলের লোকদের কান্না আর আহাজারিতে মহান আল্লাহ তাদেরকে আরেকটি সুযোগ দান করেন এবং তাদের জন্য মসিহ প্রেরণের সংবাদ দান করেন।

কিন্তু মহান আল্লাহ তাদেরকে এইবার পরীক্ষা করতে চাইলেন, তাই তিনি কুমরী মরিয়মের গর্ভে নবী ঈসাকে প্রেরণ করেন, যিনি হলেন তাদের মসিহ। কিন্তু কুমারী মরিয়ম নগণ্য গোত্রভুক্ত হওয়ায় তারা ঈসাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং তাঁর উপর জারজ অপবাদ লাগায়।
তিনি দেখেছেন তারা ধর্মের ‘বাহ্যিক’ দিকটি আঁকড়ে ধরে আছে, অথচ দুঃখজনকভাবে ‘অন্তর্নিহিত’ সারবত্তাকে তারা অবজ্ঞা করেই চলেছে। এমনকি এটার বাহ্যিক চেহারাটাও তারা বিকৃত করেছে এবং নিজেদের সুবিধা মতো এটাকে পুনরায় লিপিবদ্ধ করেছে। ঈসা (আ.) যখন তাদেরকে নিশ্চিত করলেন যে, তিনিই হচ্ছেন সেই প্রতিশ্রুত মসীহ এবং যখন তিনি নির্ভয়ে ধর্মের ‘আভ্যন্তরীণ’ সারবস্তু প্রচার করতে লাগলেন এবং বাহ্যিক রূপের বিকৃতির নিন্দা করলেন, তখন কিছু কিছু ইহুদি তাঁকে গ্রহণ করলো এবং তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন করলো, কিন্তু বেশির ভাগই তাঁকে প্রত্যাখ্যান করলো।

ঈসা (আ.) তাদেরকে রাজি করানোর হাজারো চেষ্টা করলেও সবই ব্যর্থ হয়। ইহুদিরা নবী ঈসা (আ.)-এর উপর এতই রাগান্বিত হয় যে, তারা রোমানদেরকে উত্তেজিত ক’রে নবী ঈসা (আ.)-কে ক্রুশবিদ্ধ করে এবং অবজ্ঞার ভঙ্গিতে বলতে থাকে: তারা আল্লাহর রসুল ঈসাকে হত্যা করেছে।

কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, তারা তাদের মসিহকেই হত্যার মতো জঘন্য পাপে লিপ্ত হলো। আর এখনও তারা তাদের মসিহের প্রতীক্ষায় রয়েছে।

এরপর মহান আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দেন। সেনাপতি টাইটাসের নেতৃত্বে রোমান বাহিনী ৭০ খ্রিস্টাব্দে জেরুজালেম অবরোধ করে। টাইটাস জেরুজালেম শহর ধ্বংস ক’রে দেন, এর বাসিন্দাদের হত্যা করেন এবং পবিত্রভূমি থেকে অবশিষ্ট ইহুদিদের বহিষ্কার করেন। পবিত্র মসজিদখানি আবারও ধ্বংস হয় এবং রোমান সৈন্যরা সেটাকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে, গলিত স্বর্ণ পি-ের খোঁজে প্রতিটি পাথরকে এক-এক ক’রে আলগা করা হয়, ঠিক যেটা সম্পর্কে ঈসা (আ.) সতর্ক ক’রে ভবিষ্যদ্বাণী করেন: “একটি পাথরও অপর পাথরের উপর লেগে থাকবে না; সব ভেঙ্গে ফেলা হবে।”

২ [৫৬০ খ্রিস্টাব্দ, মক্কা]

এক পবিত্র দিনে মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ নামের এক মহাপুরুষের আবির্ভাব। সেখান থেকে শুরু জগতের পরিবর্তনের। ৪০ বছর বয়সে তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত রসুল হিসেবে নিজের বার্তা প্রচার করা শুরু করেন। মক্কার সকল বিরোধিতা সত্ত্বেও তাঁর এই সংগ্রাম ক্রমাগত তীব্র থেকে আরও তীব্রতর হয়। আল্লাহর কাছ থেকে তিনি এমন এক অদ্ভূত ঐশী বার্তা লাভ করেন, যা পাঠ করলে পাষাণ হৃদয়ের মানুষ অশ্রু সজল হয়ে উঠে।
কিন্তু হায়! তারা তাঁকে নিজের ভূমি থেকে বিতাড়িত করে। তিনি ইয়াসরিবে চলে যান।

৩ [মদিনা]

বনি ইসরাইলের লোকদের সাথে এই মহাপুরুষের সাক্ষাত হলো, যারা তাদের মসিহের প্রতীক্ষায় পথ চেয়ে ছিল। আল্লাহ অতি দয়াময়। তিনি চাইলেন বনি ইসরাইল আরেকটি সুযোগ লাভ করুক। দয়াপরায়ণ হয়ে তিনি তাদেরকে সেই সুযোগ দিলেন নিজেদের গ্লানি দূর করার।

নবী মুহাম্মদ (ﷺ) যখন মদিনায় পৌঁছালেন, তখন তিনি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিলেন ইহুদিদের এবং তাদের র‌্যাবাইদের এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করার জন্য যে, তিনি আসলে আল্লাহর সত্যিকার নবী ছিলেন। তারা যাঁর আগমনের অপেক্ষায় ছিল, তিনি সেই নবীই ছিলেন। তাঁর মদিনায় অবস্থানের প্রথম ১৭ মাসব্যাপী তিনি জেরুজালেমের দিকে মুখ ক’রে নামায পড়লেন। তিনি তা করলেন কেননা ইহুদিরা ঐ কিবলার দিকে মুখ ক’রে নামায পড়তো, অর্থাৎ যারা ইব্রাহিম (আ.)-এর ধর্ম অনুযায়ী ইবাদত করতো, তাদের জন্য সেটাই ছিল কিবলা। তাঁর এ কাজ ইহুদিদেরকে এই নিশ্চয়তা দানের জন্য যথেষ্ট ছিল যে, তিনি আসলেই সত্যিকার নবী ছিলেন।
কিন্তু তিনি তার চেয়েও বেশি কিছু করেছিলেন। তিনি ইহুদিদের সাথে সাথে রোযাও রাখলেন, ঠিক ঐ সকল দিনে, যে সকল দিনে তারা রোযা রাখতো এবং তাও তাওরাতের নিয়ম অনুযায়ী (অর্থাৎ সূর্যাস্ত থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত)।

সবশেষে এমন এক ঘটনা ঘটে, যার কারণে ইহুদিদের সকল সংশয় চিরতরে দূর হয়ে যাবার কথা ছিল। ইহুদিরা যিনার অপরাধে (পরস্পরের সাথে বিবাহিত নয় এমন নারী-পুরুষের মধ্যে যৌন সম্পর্কে) অভিযুক্ত দুজনকে নবী (ﷺ)-এর কাছে উপস্থিত করে। এদের নিয়ে কি করা হবে, তা জানতে চেয়ে তারা তাঁকে পরীক্ষা করতে চাইলো। তিনি জিজ্ঞেস করলেন তাদের নিয়মে এদের কি শাস্তি হয়? তারা উত্তর দিল যে, তাদের নিয়মে এদের মুখে কালি মেখে তারপর তাদেরকে জনসমক্ষে প্রহার করার কথা। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন যে, ঐ শাস্তি তারা তাদের গ্রন্থে উল্লেখিত পেয়েছে কিনা? তিনি তখন তাদের গ্রন্থ নিয়ে এসে সেটা থেকে পড়তে বললেন (যেহেতু তিনি নিজে পড়তে বা লিখতে জানতেন না)। তারা যখন তাওরাত থেকে পড়ে যাচ্ছে, তখন তাদের প্রাক্তন র‌্যাবাই আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম, যিনি ইতোমধ্যে মুসলিম হয়েছেন, নবী (ﷺ)-এর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পাঠক যখন তাওরাতের রজম (পাথর বর্ষণে মৃত্যু) সংক্রান্ত অংশে পৌঁছে, তখন সে ঐ বাক্যটির উপরে তার আঙ্গুল রেখে তা লুকানোর চেষ্টা করে। আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম তখন তাকে থামতে বলেন ও তার আঙ্গুল উঠাতে আদেশ করেন। তখন তাকে রজম সংক্রান্ত বাক্যটি পড়তে হয়, যেখানে সেটাকে যিনার শাস্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই বাক্য পড়ে শোনানোর ঘটনাটি ইহুদিদের জন্য যথেষ্ট লজ্জাকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। নিজেদের ধর্মীয় বিধানের সাথে প্রতারণা ক’রে এবং সেই প্রতারণাকে লুকানোর চেষ্টা ক’রে ইহুদিদের আসল চেহারা ধরে পড়ে যায়। নবী (ﷺ) তখন আদেশ দিলেন, ঐ দুই অভিযুক্তকে পাথর নিক্ষেপে মৃত্যুদ- দেয়া হোক, এভাবে তিনি ইহুদি আইন প্রয়োগ করলেন, যা তারা নিজেরাই প্রয়োগ করছিল না। এই ঘটনা ইহুদিদেরকে পূর্ণভাবে নিশ্চিত করার কথা যে, তিনি অবশ্যই একজন সত্য নবী ছিলেন।

নবী (ﷺ)-এর মদিনায় আগমনের পর যখন ১৭ মাস কেটে গেলো, তখন এটা পরিষ্কার হয়ে উঠলো যে, ইহুদিরা যে কেবল তাঁকে একজন নবী হিসেবে কিংবা কুর’আনকে আল্লাহর বাণী হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে তাই নয়, উপরন্তু তারা ইসলামকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে রত।
আল্লাহ তাদের উপর এতই রাগান্বিত হলেন যে, তিনি কিবলা পাল্টে দেন, রোযার নিয়ম পাল্টে দেন এবং সূরা নুরের আয়াত নাযিল ক’রে যিনার শাস্তি প্রদান করেন।
আল্লাহর ক্ষমা লাভ করার ‘শেষ সুযোগের দ্বার’ বা ‘দরজা’ তখন ইহুদিদের জন্য চিরতরে বন্ধ হয়ে যায় এবং এখন সবচেয়ে কঠোর ঐশ্বরিক শাস্তির পালা শুরু হয়ে গেল।

৪ [এদিকে ইউরোপ …]

ইউরোপে এক আজব ও রহস্যময় বিপ্লব সাধিত হয়। পৌত্তলিক, গ্রীক এবং রোমান সভ্যতার বিকাশ ঘটে। তারা প্রায় সাথেসাথেই ও অদ্ভূতভাবে বাকী পৃথিবীর যতটুকু জয় করা সম্ভব ততটুকু বিজয়ের অভিযান শুরু করে। গ্রীক এবং রোমান উভয় ইউরোপীয় সভ্যতারই পবিত্রভূমি সম্পর্কে এক বিশেষ আগ্রহ ছিল বলে মনে হয়। আলেকজান্ডার ‘দ্য-গ্রেট’ জেরুজালেম জয় করেন এবং ইহুদি ধর্মের প্রতি আন্তরিক আগ্রহ প্রকাশ করেন। আর রোমান সাম্রাজ্য ঈসা (আ.)-এর সময় এমনকি তার পরেও জেরুজালেম তথা পবিত্রভূমিতে শাসন করে।

তারপর নিছক রাজনৈতিক সুবিধার খাতিরে ইউরোপ খ্রিস্টধর্মকে আলিঙ্গন করে, ফলে ইউরো খ্রিস্টান চার্চের উদ্ভব ঘটে এবং রোম গড়ে উঠে এই নতুন চার্চের কেন্দ্রস্থল হিসেবে। খ্রিস্টধর্মই ইউরোপের বাকী অংশের বেশির ভাগকে তার ইতিহাসের ‘বন্য গোত্র’ পর্যায় থেকে বের ক’রে নিয়ে আসে এবং গোটা ইউরোপকে খ্রিস্টরাজ্য হিসেবে একতাবদ্ধ করে। নতুন খ্রিস্টান চার্চ মধ্যপ্রাচ্যের সনাতন খ্রিস্টধর্ম থেকে তার স্বাতন্ত্র্যকে এতোই গুরুত্ব দিতো যে, তারা ঈসা (আ.)-এর জন্মবার্ষিকী উদযাপনের জন্য নতুন তারিখ উদ্ভাবন করলো। এই নতুন ইউরোপীয় বড়দিন নির্ধারিত হলো ২৫শে ডিসেম্বর।

কিন্তু ইউরো খ্রিস্টধর্ম তাৎপর্যপূর্ণ এবং রহস্যময়ভাবে সনাতন রক্ষণশীল বাইযান্টীন খ্রিস্টধর্ম থেকে পৃথক অবস্থান গ্রহণ করে। এই নতুন খ্রিস্টান চার্চ ইউরোপের উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ পরিপূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠা করার সাথে সাথে পবিত্রভূমির প্রতি এক অভূতপূর্ব মোহাচ্ছন্নতা প্রদর্শন করে, যা অন্য কোন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মাঝে দেখা যায়নি। আর তাই ক্রুসেডসমূহ কেবল খ্রিস্টানদের আক্রমণ ছিল না, বরং বলা যায় সেগুলো ছিল ইউরো খ্রিস্টানদের আক্রমণ।

পবিত্রভূমির নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নেবার লক্ষ্যে মুসলিমদের বিরুদ্ধে একের পর এক রক্তক্ষয়ী ক্রুসেড পরিচালনা করা হয়। যখন সুলতান সালাহুদ্দীন খ্রিস্টান ক্রুসেডারদের পরাস্ত করেন, তখন ইউরোপীয়দের দ্বারা বাস্তবায়িত পবিত্রভূমির এই স্বল্পস্থায়ী স্বাধীনতার লজ্জাকর সমাপ্তি ঘটে এবং পবিত্রভূমির উপর মুসলিম নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।

ক্রুসেডের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো যে, সেটা ছিল একান্তই এক ইউরোপীয় প্রচেষ্টা। ইউরোপীয় ক্রুসেডারদের যদিও বাইযান্টীন খ্রিস্টানদের আবাসভূমির উপর দিয়ে যেতে হয়, তবুও অইউরোপীয় এই খ্রিস্টানরা ইউরোপীয়দের সাথে যোগ দেয়নি। আর তাই ক্রুসেডসমূহে তাদের কোন ভূমিকা ছিল না।
সুতরাং পবিত্রভূমি ও জেরুজালেম-সংক্রান্ত মোহাচ্ছন্নতা খ্রিস্টান বৈশিষ্ট্যের চেয়ে বরং ইউরোপীয় বৈশিষ্ট্য বললেই ঠিক বলা হবে। পবিত্রভূমির প্রতি এই অদ্ভূত ইউরো-খ্রিস্টান মোহের কারণ কি?

৫ [১৮৯৭-১৯৪৮]

যায়োনিস্ট আন্দোলনের সূচনা, যার মূল লক্ষ্য ছিল ইহুদিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্রের তৈরি করা। ‘প্রটোকল অফ যায়নে’ আমরা তাদের এজেন্ডার চিত্র দেখতে পাই এবং তাদের লবির অপকর্ম আমরা হেনরি ফোর্ডের ‘ইন্টারন্যাশনাল জ্যু’-তে দেখতে পাই।
আজবভাবে, সমসাময়িক সময়ে ফেরাউনের লাশও আবিষ্কৃত হয়।
১৯১৭ সালে ব্রিটেনের ঐ দ্বীপই ব্যালফর ঘোষণার মাধ্যমে জানালো যে, ফিলিস্তিনে ইহুদি জাতীর আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা কাজ ক’রে যাবে। মাত্র দুবছর পরে তারা অইহুদি (মুসলিম) শাসন থেকে পবিত্রভূমিকে মুক্ত করার লক্ষ্যে এগিয়ে যায়। ১৯১৭ সালে জেনারেল অ্যালেনবির নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ বাহিনী জেরুজালেম এবং পবিত্রভূমি রক্ষায় নিয়োজিত তুর্কি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করলে একাজ সম্পন্ন হয়। আপাত খ্রিস্টান ইউরোপ দ্বারা পরিচালিত পুরাতন ক্রুসেড যেখানে বিফল হয়েছিল, সেখানে ধর্মবিমুখ ইউরোপের পরিচালিত নতুন ক্রুসেড সফল হয়। জেরুজালেম ও পবিত্রভূমিকে মুক্ত করার দুটো প্রচেষ্টাই ছিল ইউরোপীয়। দুটোই ছিল ক্রুসেড। বিজয়ী বেশে জেরুজালেমে প্রবেশ করার সময় তার স্মরণীয় ঘোষণার মাধ্যমে, জেনারেল অ্যালেনবি নিজেই এটা নিশ্চিত করেন: “আজ ক্রুসেডের সমাপ্তি হলো”। তাই এটা পরিষ্কার যে, পবিত্রভূমিকে মুক্ত করার প্রচেষ্টার মাঝে ধর্মের কোন ভূমিকা ছিল না। এটা ছিল পৃথিবীর মঞ্চে নতুন নায়কের রূপে ইউরোপের নতুন চেহারা!

লীগ অফ নেশন্সের ছত্রছায়ায়, ব্রিটেন তখন নিয়োগকৃত শক্তি হিসেবে পবিত্রভূমির নিয়ন্ত্রণ ভার গ্রহণ করে এবং ইহুদি জাতীর আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাস্তবায়নের কাজে অগ্রসর হয়।
পবিত্রভূমিতে ইহুদিদের ‘প্রত্যাবর্তন’ বাস্তবায়নের যায়োনিস্ট আন্দোলনকে ব্রিটেন সহায়তা দান করে এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৪৮ সালে ইসরাইলি রাষ্ট্রের সৃষ্টির মধ্য দিয়ে তা বাস্তবায়িত হয়। ধাত্রী ব্রিটেন যখন ইসরাইল-রূপ শিশুকে উপস্থাপন করলো, পৃথিবী তখন দৃশ্যত প্রাচীন ইসরাইলি রাষ্ট্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা অবলোকন করলো, যা ২০০০ বছরেরও আগে মহাপবিত্র আল্লাহ কর্তৃক ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল।

 

Weight 0.5 kg

 

অন্যের উপর শাসন চালানোর লালসাময় নিষিদ্ধ বৃক্ষের নিকট গমনের উপর ঐশ্বরিক নিষেধাজ্ঞা জারি দ্বারা ইতিহাসের সূচনা ঘটে। ইতিহাসের সমাপ্তি ঘটছে পৃথিবীর মঞ্চে আবির্ভূত নতুন অভিনেতার মাধ্যমে, যে পৃথিবী শাসনের অপ্রতিদ্বন্দ্বী উপনিবেশিক লালসা প্রদর্শন করে। ঐ নতুন অভিনেতা এক অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতা ধারণ করেছে এবং ইতোমধ্যে সর্বদিকে ছড়িয়ে পড়া ইয়াজুজ ও মাজুজদের মাধ্যমে উক্ত ক্ষমতা দ্বারা সে পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েছে। এরপর সে ইহুদিদের জন্য পবিত্রভূমিকে মুক্ত করার মিশনে নামে এবং ঐশ্বরিক আজ্ঞাবলে পবিত্রভূমি থেকে দুই হাজার বছরের নির্বাসনের পর, পবিত্রভূমিতে তারা নিজেদের অধিকারের দাবি নিয়ে ফিরে আসে এবং পবিত্রভূমিতে ইসরাইলি রাষ্ট্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। ঐ রহস্যজনক নতুন অভিনেতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্যাক্স আমেরিকা’-কে [আমেরিকান সাম্রাজ্যকে] ইসরাইলের ‘প্যাক্স জুডাইকা’ [ইহুদি সাম্রাজ্যের] মাধ্যমে প্রতিস্থাপিত করতে যাচ্ছে। ইসলামি এসক্যাটলজির আলোকবর্তিতাস্বরূপ এই গ্রন্থ উক্ত আজব ও রহস্যজনক নতুন অভিনেতাকে সনাক্ত করেছে, যে শেষ সময়ে পৃথিবীর মঞ্চে কেন্দ্রীয় চরিত্র দখল ক’রে আছে এবং যে আধুনিক পশ্চিমা সভ্যতাকে জন্ম দিয়েছে – সে হচ্ছে: ভন্ড মসিহ দাজ্জাল।

Based on 0 reviews

0.0 overall
0
0
0
0
0

Be the first to review “দাজ্জাল : কুর’আন ও ইতিহাসের সূচনা”

There are no reviews yet.

You may also like…

SHOPPING CART

close