ইংরেজদের স্বৈরাচার ও নিত্য নতুন জুলুম-নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে উপমহাদেশের মুসলমানরা যখন জিহাদের ঝান্ডা উত্তোলন করল, পাক-ভারত-বাংলার সর্বত্র যখন ইংরেজ-খেদাও আন্দোলনের ডঙ্কা বেজে উঠল, তখন সাধারণ মুসলমানদের জিহাদী জযবাকে নষ্ট করার উদ্দেশ্যে এবং মুসলিমবিশ্বের ঐক্য ধ্বংসের লক্ষ্যে কাদিয়ানী মতবাদের নাটক সাজানো হয়, যা মূলত ইসলামের বিরুদ্ধে এক ভয়ংকর বিদ্রোহ। আখেরী নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তিরোধানের পর মুসায়লামা কাজ্জাব, আসওয়াদ আনাসি, বাদশাহ আকবারসহ যেসকল হতভাগা ইসলামের নামে নতুন ধর্মমত প্রবর্তনের চেষ্টা করেছে, তাদের মধ্যে মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী ছিল সর্বাধিক ধূর্ত। সে প্রথমে নিজেকে মুজাদ্দিদ, তারপর প্রতিশ্রুত মাসিহ, তারপর যিল্লি নবী এবং সবশেষে স্বয়ংসম্পূর্ণ নবী বলে দাবি করে। নবুওয়াতের দাবি করার সাথে সাথেই মির্জা কাদিয়ানীর মতবাদের বিরুদ্ধে উপমহাদেশের আলেমসমাজ সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। তাদের সর্বোত প্রচেষ্টায় পাকিস্তানসহ বিভিন্ন মুসলিমরাষ্ট্রে কাদিয়ানী মতবাদ কুফর এবং এর অনুসারীরা অমুসলিম বলে ঘোষিত হয়।
বাংলাদেশেও কাদিয়ানী মতবাদ তৎপর রয়েছে। প্রায়ই তারা নতুন নতুন মোড়কে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। বরাবরের মতো তাদের প্রথম টার্গেট হলো ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী এবং সাধারণ মুসলমানরা, যারা এ বিষয়ে পর্যাপ্ত জানশোনার অভাবে খুব সহজেই তাদের ফাঁদে পা দেয়। আলোচ্য অনুবাদগ্রন্থ মূলত বাংলাদেশের মানুষদের কাদিয়ানী মতবাদ সম্পর্কে সচেতন করারই একটি প্রয়াস। বিংশ শতাব্দীর ইসলামী চিন্তানায়ক সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদবী রহ.-এর আলোচ্য রচনায় কাদিয়ানী সমাজ ও তাদের মতবাদের রূপরেখা অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়েছে। এই পুস্তকটি কাদিয়ানী মতবাদের নির্ভরযোগ্য ও বিন্যস্ত তথ্যাবলি, মতবাদের স্থপতির বয়ান-আলোচনা ও রচনাসম্ভার এবং ঐতিহাসিক তথ্য-উপাত্তের আলোকে সেই রশ্মি ও উপাদান সমাবেশ করে—যা একজন চিন্তাশীল ও ন্যায়পরায়ণ পাঠককে নিরপেক্ষ রায় কায়েম করতে এবং সঠিক ফলাফলে উপনীত হতে সাহায্য করবে এবং কাদিয়ানী মতবাদের ভ্রষ্টতা ও অসারতা স্পষ্টরূপে তার সামনে তুলে ধরবে।
আল্লাহ তায়ালা এই ফেতনা থেকে আমাদের হেফাযত করুন। আমিন।
There are no reviews yet.