‘সাহাবিদের চোখে দুনিয়া’ থেকে কিয়দংশ
দুনিয়াকে আমরা নিজেদের কল্পিত চশমা দিয়ে দেখতেই বেশি পছন্দ করি। কল্পনার ক্যানভাসে দুনিয়াকে নিয়ে হাজারও রঙিন ছবি আঁকি। অথচ এটা যে মেকির জগত, এ কথাটা বুঝতে চাই না। আর বুঝলেও মানতে চাই না। আসলে দুনিয়ার ভালোবাসা আমাদেরকে প্রতারিত করেছে, স্রষ্টার স্মরণ থেকে গাফিল করে দিয়েছে। কাফিরদের উন্নতি আর সমৃদ্ধি দেখে আজ আমাদের অন্তরে ঝড় বয়ে যাচ্ছে। অথচ ওদের সুখটা কেবল দুনিয়াতেই। আখিরাতে ওদের কোনো অংশ নেই।
.
কিন্তু মুমিনদের জন্যে? দুনিয়া মুমিনদের জন্যে জেলখানা। হ্যাঁ, সত্যিই। রাসূল (স.) এমনটাই বলেছেন। মুমিনের জন্যে এটা আরাম-আয়েশের জায়গা নয়। এখানে একজন মুমিন তার দ্বীন ও ঈমানের জন্যে তীব্র কষ্ট আর মুজাহাদা করবে। এবং আখিরাতে এর উত্তম বদলা পাবে।
.
নাওফ আল বিকালি (রাহ.) একটি ঘটনা বর্ণনা করেন। একবার একজন মুমিন আর একজন কাফির মাছ শিকার করতে বের হলো। কাফির জাল ফেলতে লাগলো এবং তার দেবতাদের স্মরণ করতে লাগলো। তার জাল ভরে মাছ উঠতে লাগলো। আর মুমিন ব্যক্তি জাল ফেলতে লাগলো আর আল্লাহকে স্মরণ করতে লাগলো। কিন্তু তার জালে কোনো মাছ উঠে আসছিলো না।
.
তাঁরা দুজনেই সূর্যাস্ত পর্যন্ত মাছ শিকার করলো। মুমিন ব্যক্তিটি একটিমাত্র মাছ শিকার করতে পারলো। সে যখন মাছটি হাত দিয়ে ধরতে গেলো, সাথে সাথেই মাছটি পানিতে পড়ে গেলো। সে শূন্যহাতে ফিরে এলো। তার কাছে কোনো মাছই ছিলো না। কিন্তু কাফির ব্যক্তিটির নৌকোভর্তি মাছ ছিলো।
.
এ দৃশ্য দেখে মুমিন ব্যক্তির ফিরিশতা আশাহত হলো। সে বললো, ‘হে আমার রব, আপনার এই মুমিন বান্দা আপনাকে ডেকেছে, অথচ সে খালি হাতে ফিরে এসেছে। আর আপনার কাফির বান্দা তার নৌকোভর্তি মাছ নিয়ে বাসায় ফিরেছে।’
আল্লাহ তাআলা ফিরিশিতাটিকে ডেকে বললেন, ‘এদিকে এসো।’
.
আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে ওই মুমিন বান্দাটির অবস্থান দেখালেন। এরপর বললেন, ‘আমার মুমিন বান্দা এখানে আসার পর সবকিছুর কষ্ট ভুলে যাবে।’
এরপর তিনি ফিরিশতাকে ওই কাফির বান্দাটির জাহান্নামের অবস্থান দেখালেন। এরপর বললেন, ‘সে দুনিয়াতে যা কিছু অর্জন করেছে, তা কি এখানে তার কোনো কাজে আসবে?’
ফিরিশতা বললো, ‘না, আল্লাহর কসম! হে আমার রব।’
জীবনের এই দৃষ্টিভঙ্গি উম্মতের সেরা প্রজন্ম সাহাবিরা কিভাবে নিয়েছিলেন তা উমর ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)’র মুখেই শোনা যাক-
” অবশ্যই তোমরা জেনে রেখো, লোভই দারিদ্রতা; আর অভাবহীনতার বোধই স্বচ্ছলতা। মানুষ যখন কোন বস্তু থেকে অভাবহীন বোধ করে, তখন তার ওই বস্তুর কোন প্রয়োজন থাকেনা।”
“সাহাবিদের চোখে দুনিয়া”(হাদিস নং- ৫৫)
জীবনের সকল জটিল বিষয় সহজ করতে আমাদের পড়া প্রয়োজন সাড়ে এগারো শত বছর আগের কিতাব ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল (রহিমাহুল্লাহ)র কিতাবুয যুহদের ২য় অংশ সাহাবিদের চোখে দুনিয়া
বই: সাহাবিদের চোখে দুনিয়া
মূল নাম: কিতাবুয যুহদ
লেখক: ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল(রহিমাহুল্লাহ)
অনুবাদক: আব্দুস সাত্তার আইনী
পৃষ্ঠা: ২৩২
কভার: হার্ড কভার
মুদ্রিত মূল্য: ৩১৭ টাকা
There are no reviews yet.