হাদিস ও আহলে হাদিস সম্পর্কে মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরি দা. বা.-এর মূল্যায়ন।
হাদিস ও আহলে হাদিস বইটি পাকিস্তানের এক যোগ্য আলেম মাওলানা আনওয়ার খুরশিদ সাহেবের লেখা। কয়েকটি জায়গা পড়ে দেখলাম, বইটি বেশ উপকারী মনে হয়েছে। এই বিশাল বইয়ে লেখক যে-বিষয়টি তুলে ধরেছেন, তা হল, হাদিসের সাথে গায়রে মুকাল্লেদদের সম্পর্ক শুধুই লোকদেখানো। তারা যে দাবি করে, হাদিস অনুসারে কেবল তারাই আমল করে, তাদের এই দাবিটা একেবারেই অসার। তেমনি তাদের এই দাবিও অসার যে, অন্যান্য মুসলমানরা, বিশেষ করে হানাফিরা, হাদিস মানে না বা তাদের নিকট হাদিস নেই, তারা কেবল অনুমানের ভিত্তিতে এবং কিয়াস অনুসারে আমল করে। অথচ ফিকহে হানাফি শরয়ি দলিলের যতটা কাছাকাছি, অন্য কোনও ফিকহ ততটা নয়।
আলোচ্য কিতাবটিতে ইমাম আবু হানিফা রহ. এর মানাকেব ও মাকাম, তাঁর একান্ত বৈশিষ্ট্যাবলি ও ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। ইমাম সাহেবের প্রতি গায়র মুকাল্লেদদের যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ রয়েছে, তা তুলে ধরা হয়েছে। এরপর তাহারাত ও নামায সম্পর্কিত অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ মাসয়ালা কুরআন-হাদিসের প্রমাণ দ্বারা সাব্যস্ত করা হয়েছে। আর সেগুলো সম্পর্কে গায়রে মুকাল্লেদদের যে প্রপাগান্ডা রয়েছে যে, হানাফিদের নিকট এগুলোর সপক্ষে কোনও প্রমাণ নেই, তার মূলোৎপাটন করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় দেখানো হয়েছে যে, গায়রে মুকাল্লেদরা যে হাদিস অনুসারে আমল করার দাবি করে, তা দাবির মধ্যেই সীমিত। মূলত হাদিসের সাথে তাদের আমলের কোনও মিল নেই। হাদিসের ওপর তাদের আমল নেই, বরং এর প্রতি তাদের বিদ্বেষই রয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য সুন্নাত জীবিত করা নয়; বরং উম্মতের মধ্যে মতবিরোধ ও বিভেদ সৃষ্টি করা। এরপর- লেখার কারণ, কিতাবের ধারা ও লেখার উদ্দেশ্য বর্ণনা করা হয়েছে।
শিক্ষিত সকল মুসলমানের উচিত এই বই থেকে উপকৃত হওয়া। এখানে তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত অনেক কিছু পেয়ে যাবেন, যা দীর্ঘদিন থেকে খুঁজছিলেন। যেমন পুরুষ ও নারীর নামাযের পার্থক্যের দলিল, তাহাজ্জুদ ও তারাবীহর নামায আলাদা দুটি নামায। এগুলোকে এক মনে করা মৌলিক ভুল, ইত্যাদি।
আল্লাহ তায়ালা বইটি দিয়ে উম্মতকে উপকৃত করুন। সাদা মনের মানুষদের আহলে হাদিসের চক্রান্ত থেকে হেফাজত করুন। তাদের গোমরাহি থেকে বাঁচিয়ে রাখুন। আমিন!
—সাঈদ আহমদ পালনপুরি আফাল্লাহু আনহু
খাদেমে দারুল উলুম দেওবন্দ
তারিখ : ১৫- ৪- ১৪১৯ হিজরি
There are no reviews yet.