Dark Light
-27%

হারামাইনের আর্তনাদ

Availability:

Out of stock



বই: হারামাইনের_আর্তনাদ
অনুবাদ: এনামুল হক মাসউদ
সম্পাদনা: কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক

350.00 480.00

Out of stock

Compare
হারামাইন_আমার_ভালোবাসা, প্রেম৷ এই হারামাইন নিয়ে কতটা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না৷
ইসলামের ইতিহাসে এমন বহু ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, যা ছিলো মুসলমানদের জন্য ভীষণ ভয়ংকর আর শোকাবহ । কিন্তু বর্তমান শতাব্দীতে এমন এক ঘটনার অবতারণা হয়েছে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওফাত-শোকের পর যা সবচে বেশি বেদনার, অধিক পেরেশানীর কারণ। বাগদাদ ধ্বংসের ঘটনাও যার সামনে অনেক হালকা। উসমানি খেলাফতের পতনও যার সামনে তুচ্ছ। তা হলো জাযিরতুল আরব। আরব উপদ্বীপের পবিত্র যমিনে যুদ্ধ সরঞ্জাম ও সৈন্য সামন্ত নিয়ে অপবিত্র ইহুদি-খৃষ্ঠানদের আগমন। এই জঘন্য ঘটনার সূচনাটা হয়েছে এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে। আরব উপদ্বীপের দক্ষিণাংশে ইহুদিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। প্রথম কিবলার পতন থেকে শুরু হয়ে সশস্ত্র কাফের সৈন্যদের স্থায়ী সেনা ছাউনী এখন হারামইন শরিফাইন তথা মক্কা-মদিনার আশপাশ পর্যন্ত পৌছে গেছে। মুসলিম উম্মাহ যদি এমনভাবে নির্জিব হয়ে যায়,আর জিহাদ-কিতালের কার্যকরি ও পবিত্র ব্যবস্থার সাথে এতটা সম্পর্কহীন থাকে, তা হলে অদূর ভবিষ্যতে না জানি কি দিন দেখতে হয় ।
এ সম্পর্কে উপসাগরীয় শাসকদের উদাসীনতা আর নিরবতার রহস্য তো বুঝে আসার মতোই। কারণ তাদেরকে দুনিয়াদারিতে লাগানো আর জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ থেকে দূরে রাখার জন্য অনেক আগ থেকেই করা হয়েছে দীর্ঘ মেয়াদী কর্ম পরিকল্পনা ও গভির ষড়যন্ত্র। এ ব্যাপারে গোটা মুসলিম বিশ্বের লক্ষ্যণীয় ও অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, উক্ত ভূমিতে বসবাসকারী চার মিলিয়নেরও বেশি মুসলমান এতটা নিরব থাকে কীভাবে ! বার বার সতর্ক করার পরও তাদের এমন জঘণ্য উপেক্ষা কেমন করে প্রকাশ পায় ! বিষয়টি নিতান্তই আক্ষেপের। আফসোসের। চরম হৃদয়বিদারক।
মনে হচ্ছে, তারা যেন কোনো অলৌকিক ঘটনা ঘটার আঁচ করতে পেরেছে। কিংবা অজানা কোনো মহাশক্তির নিশ্চিত অপেক্ষায় আছে। যা তাদেরকে সমূহ এ মহাবিপদ থেকে রক্ষা করবে। তাইতো তারা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ থেকে উদাসীন আর নিশ্চিন্ত হয়ে নিজেদের নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। আরাম-আয়েশের উপকরণ সংগ্রহে এতটা ব্যাকুল। তাদের মধ্যে দুদিন পর নি:শেষ হয়ে যাওয়া আয়েশী জীবন সাজাবার এত বেশি উন্মাদ-প্রতিযোগিতা।
অথচ তারা ভাবেনা যে, মুসলমানেরা দ্বীন-শরিয়তের কাজকে নিজেদের প্রয়োজনের উপর প্রাধান্য না দিলে কখনোই দুনিয়ায় উন্নত ও সফল হতে পারে না। তারা বুঝে না যে, তারা তাদের আশ পাশে যত নিরাপত্তা, আরাম-আয়েশ আর দুনিয়ার রূপ-লাবণ্য দেখছে, তা কোনো ভাবেই স্থায়ী শান্তি-নিরাপত্তার গ্যারান্টি হতে পারে না। আসল স্থায়িত্ব তো হলো, মহান রবের পথে সাত আসমানের উপর থেকে অবতীর্ণ পবিত্র দ্বীনের হেফাযত ও পাহারাদারির জন্য এসব কিছু কুরবানী দেওয়ার মধ্যে। তবে এটা নিশ্চিত সত্য যে, মহান কুদরতের মালিক আল্লাহ তায়ালা তার দ্বীনের হেফাযতের জন্য কখনও-কখনও প্রকৃতির ব্যতিক্রম কোনো উপায়ও বাস্তবে নিয়ে আসেন। কিন্তু এটা কখনই বান্দার সেই ফরয থেকে দায়মুক্তির কারণ নয়। যা তার উপর অতিআবশ্যক করা হয়েছে। রবের পক্ষ থেকে এমন ঘটনার প্রকাশ, কোনো ভাবেই দুনিয়াতে কারো জন্য নিশ্চিন্ত-উদাসিনতা আর অলসতার বৈধতা হতে পারে না। আর তা তাকে বাঁচাতেও পারবে না রোয-কিয়ামতে আল্লাহর প্রশ্নের সম্মুক্ষীন হওয়া থেকে । সে তখন এমনসব প্রশ্নের মুখোমুখি হবে, যখন তার মাঝে ও তার খালিক-মালিক আল্লাহর মাঝে কোনো আড়াল থাকবে না।
মারাত্মক ভয় হয়, যদি এমন গুরুত্বপূর্ণ আর ভয়াবহ বিষয়ে মুসলিম বিশ্ব এভাবে চুপ থাকে, না জানি আগামী প্রজন্ম তাদের পূর্বপুরুষদের বীরত্ব-সাহসিকতা আর ত্যাগের ইতিহাস ভুলে যায়। আর বলা শুরু করে, তাদের বাপ-দাদারা না কোনো উন্নতির ধারক ছিলেন, না তাদের কোনো সম্মান-মর্যাদা আর আত্মগৌরব ছিলো। বরং তাদের সবকিছু চিনিয়ে নেয়া হয়েছে,আর তারা চেয়ে চেয়ে দেখেছে আর আফসোস করেছে। আর এখন জীবন চলার জন্য বাজি খেলার চেষ্টা করা বর্তমানে তাদের উত্তরসূরীদের উপর ফরয। কারণ এ ছাড়া ভিন্ন কোনো পথ তাদের বাকি নেই। আরও উৎকণ্ঠার বিষয়, মুসলমান যেভাবে উন্দুলুস কে ভুলতে বসেছে, হারাতে বসেছে তাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে, কদিন পর তারা নিজেদের অন্যের গোলাম আর সেবাদাস হিসেবেই কল্পনা করবে। মনে করবে তারা ভূখন্ডহীন, উদ্বাস্তু। কারণ এখনতো বাইতুল মুকাদ্দাসের উপর আফসোসকারী অনেক পাওয়া যায়, কিন্তু ইসরাইলের দখলে থাকা মুসলিম এলাকাগুলোর পুনরুদ্ধারের এতোটুকুও ফিকির নেই। কাশ্মীরের শোক তো তাদের আছে, কিন্তু হিন্দুদের নিকট রয়ে যাওয়া, ঐ সকল বিশাল অঞ্চল যা মোগল শাসনের অন্তর্ভূক্ত ছিলো, তা হারিয়ে যাওয়ার গ্লানী, ক্ষোভ আর পরাজয়ের লজ্জা একদম নেই। মনে হয়, এগুলো তাদের ছিল না কিংবা তাদের রাখবার যোগ্যতা চিরতরে ম্লান হয়ে গেছে।
ভীষণ আশংকার বিষয়, না জানি আগামী কাল তারা যখন জাযিরাতুল আরব তথা আরব উপদ্বীপের অন্যান্য পবিত্র ভূমিগুলোতে ইহুদি-খৃষ্টানদের অবৈধ অনুপ্রবেশের জোয়ার দেখতে পাবে, তারা তা প্রতিরোধ না করে, নিজেদের সার্বভৌমত্ম রক্ষা করা ব্যতিরেকে উল্টো এটাকে সাধারণ ঘটনা কিংবা যুগের দুর্ঘটনার অংশ মনে করা শুরু করে দেয়। শেষ পর্যন্ত চির গোলামী আর লাঞ্চনার বেড়ি সাদরে বরণ করা শুরু করে দেয়। আল্লাহ রক্ষা করুন।
এই অন্যায় নিরবতা আর ধ্বংসাত্মক স্থবীরতাকে ছিন্ন করে, মুসলিম উম্মাহকে গুরুত্বপূর্ণ এই ফরিযা আদায়ে উৎসাহ যোগাতেই এই গ্রন্থের সংকলন। এতে নিম্ন বর্ণিত চারটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
১. বিষয়বস্তুর সাথে সম্পৃক্ত উদৃতি ও টিকা।
২. রেফারেন্সের সাথে পরীক্ষিত ও প্রমানীত সুষ্পষ্ট বিশ্লেষণ।
৩. কিতাবের শেষে জুড়ে দেওয়া হয়েছে বিষয়সংশ্লিষ্ট ছবি ও মানচিত্র।
৪. রয়েছে পবিত্র হেরেমের ইমাম, আলি আবদুর রহমান আল-হুযাইফির স্মরণীয় ঐতিহাসিক খুতবা এবং মুসলিম বিশ্বের উদ্দেশ্যে মুজাহিদে ইসলাম, শাইখ উসামা বিন লাদিন রাহ. এর ঐতিহাসিক চিঠি।
আরও রয়েছে উপসাগরীয় সমস্যা সম্পর্কে ‘সাপ্তাহিক যরবে মুমিনে’ প্রকাশিত মুফতি আবু লুবাবা শাহ-মানসুর হাফিযাহুল্লাহ-এর ধারাবাহিক প্রবন্ধ। আছে জাযিরাতুল আরব তথা আরব উপদ্বীপে কাফের সৈন্যদের উপস্থিতি সম্পর্কে উলামায়ে কেরামের ফতোয়াসমূহ।
এই গ্রন্থে মিলবে নিজেদের সরলতা ও অনুভতিহীনতার অভিযোগ। অন্যদের চালাকি ও প্রতারণার চিত্র। আছে আমাদের বিস্তারিত রোগের বর্ণনা। সাথে সমাধানের কার্যকরি প্রেসক্রিপশান। এ সবকিছুর বর্ণনা এজন্য প্রয়োজন যে, বর্তমানে মুসলমানদের মধ্যে দুপ্রকার চিন্তার লোক পাওয়া যায়।
প্রথমত – হজ্জ ও উমরার সফর নিরাপদে করতে পারায় যাদের বিশ্বাসই হয় না যে, ইহুদি খৃষ্টানদের পক্ষ থেকে এতো বড় আক্রমন ও অবৈধ অনুপ্রবেশ সংঘটিত হয়ে গেছে। এই গ্রন্থে এই বিষয়ে তাদেরকে সচেতন করা হয়েছে। যথেষ্ঠ উৎসাহ যোগানো হয়েছে, মাথার উপর আরোপিত ঝড়ের মূলৎপাটনে প্রস্তুত হওয়ার জন্য।
দ্বিতীয়ত – যারা এই ঘটনাকে তো স্বীকার করে, কিন্তু এসম্পর্কে নিজেদের উপর অর্পিত দায়িত্বের ব্যাপারে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেই। তারা এ ব্যাপারে কি করতে পারে এ ব্যাপারে গ্রন্থটি তাদেরকে পথ দেখাবে।
মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ শক্তি ও সামর্থনুযায়ী হক-বাতিলের মধ্যে সংগঠিত এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে, অনেক কিছুই করতে পারে। উলামায়ে কেরাম ও ওয়ায়েজীনে কেরাম তাদের ওয়াজও বক্তৃতায় উৎসাহের মাধ্যমে, ব্যবসায়ী ও বিত্তশালীরা আল্লাহর রাস্তায় লড়াইরত মুজাহিদদের প্রয়োজনে মাল খরচ করে, যুবক তার পবিত্র যৌবনকে আল্লাহর রাহে উৎসর্গ করে কিংবা নিজে কিছু করতে না পারলেও অন্তত অন্যদেরকে প্রস্তুত করার সাথে সাথে মুজাহিদদের জন্য বিজয় ও সাহায্যের দুয়া করে এই পবিত্র প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ করতে পারে।
অবশেষে এই আবেদন করে এই লেখা সমাপ্ত করছি, হারামাইনের বিষয়টি এই উম্মাহর একমাত্র বিষয়, যার উপর গোটা মুসলিম উম্মাহর ঐক্য হতে পারে। এজন্য ঐক্য ও সংহতির আহ্বায়ক উলামায়ে কেরামকে এ ব্যাপারে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া উচিৎ। যরবে মুমিন এই বিষয়ে যা কিছু লিখেছে, তা এই বিষয়ে শুধুই শোক ও কান্না নয়, না এমন আর্তনাদ ও আত্মচিৎকার, যা অলসতা থেকে জাগ্রত করে হীনমন্যতায় নিক্ষেপ করবে। বরং তা শিরা-উপশিড়ায় বিদ্যুৎ প্রবাহকারী, তনু-মনে উষ্ণতা সৃষ্টিকারী লেখা, যা মুসলিম উম্মাহর মাঝে জিহাদি প্রেরণার প্রাণ সঞ্চার করবে। দ্বীন বিজয়ের জন্য জীবন উৎসর্গে নিজেকে প্রস্তুত করতে এবং এলায়ে কালিমাতুল্লাহ তথা আল্লাহর কালিমা উঁচু করতে নিজের সবকিছু উৎসর্গ করার প্রেরণা সৃষ্টি করতেই ছাপা হয়েছে।
বিষয়টি শুধু উপসাগরের বিষয়ই নয়। কিংবা শুধু পবিত্র হারামের বিষয় নয়, বাইতুল মুকাদ্দাস এবং হারামে ইবরাহীমীরও বিষয়। কুরতুবার জামে মসজিদ ও ফয়যাবাদের বাবরী মসজিদেরও। প্রতিটি ঐ পবিত্র ভূমির, যেখানে কখনও তাকবির ও তাহলিলের সূর-মূর্চনায় গুঞ্জরিত হয়েছিল। আজ যেখানে বিরান ও মুমূর্ষতার রাজত্ব। প্রত্যেক সেই পবিত্র অঞ্চলের, যা স্বল্প সময়ের জন্য হলেও তাওহিদবাদীদের সেজদার দ্বারা আবাদ ছিলো, আজ মুশরিক এবং অভিশপ্ত ইহুদি-খৃষ্টানদের জবর দখলে ।
আর তা ততক্ষন তাদের দখলে থাকবে, যতক্ষন পর্যন্ত মুসলমান ইবাদতের পাশাপাশি নিজেদের সংরক্ষণকেও ফরয মনে না করবে। সিজদার আদবের প্রতি লক্ষ্য রাখার পাশাপাশি, সিজদার জায়গার হেফাজতও করবে । যেদিন থেকে তারা এই আদবসমূহের লক্ষ্য রাখা শুরু করবে, সেদিন থেকে নিঃসন্দেহে তাদের পুনরায় উত্থানের সফর শুরু হয়ে যাবে। কেননা বিশ্বের ইতিহাস সাক্ষী, যে যুগেই মুসলমানদের মাঝে এই গুন তৈরী হয়েছে, কোন শক্তি তাদেরকে পেরেশান করতে পারেনি। সর্বদা সফলতা তাদের পদ চুম্বন করেছে। পুলকতা ও আনন্দ তাদের গলার মালা হয়েছে। বিজয় হয়েছে তাদের বুকের ব্যাজ। আল্লাহ তায়ালা এই মালা দিয়ে পুনরায় তাদের গলাকে অলংকৃত করুন। সজ্জিত করুন সেই ব্যাজ দিয়ে তাদের সীনাকে ।
আমিন।

 

Weight 0.400 kg

Based on 0 reviews

0.0 overall
0
0
0
0
0

Be the first to review “হারামাইনের আর্তনাদ”

There are no reviews yet.

You may also like…

SHOPPING CART

close