তুমি, আমি, আমরা কেউই নিজের মালিক না। এমকি আমাদের নবিজিও নিজেই নিজের মালিক নন। তিনিও রাজাধিরাজ আল্লাহর দাস। আমরা সকলেই মহান রবের মালিকানাধীন। হ্যাঁ, বাহ্যিকভাবে আমরা হয়তো কারও অধীনস্থ নই, কিন্তু ভিতরগত দিক থেকে আমরা সম্পূর্ণ অধীন। একজন নির্দিষ্ট সত্তাকে কেন্দ্র করেই আমাদের জীবন পরিচালিত হয়। একজন মনিবের আনুগত্যের মধ্য দিয়েই কাজ করে যায় আমাদের শরীর। আমাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে শুরু করে কোষের প্রতিটি উপাদান একজন সত্তার হুকুমেই তাদের কাজ চালু রাখে। কেউই আমরা স্বাধীন নই। স্বাধীন নয় আকাশে উড়ে-চলা পাখির ঝাঁকও।
.
আমরা চাইলেই নিজেদের ইচ্ছেমতো বেঁচে থাকতে পারব না। পারব না নিজেদের বয়স আটকে রাখতে। চিরযৌবন ধরে রাখার যত প্রয়াসই চালানো হোক না কেন, কোনো ফায়দা নেই। একদিন ঠিক আমাদেরকে মৃত্যুর কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে। কেউ ঠেকাতে পারবে না। কারণ, আমরা সবাই একজন মালিকের গোলাম। তাঁর ইচ্ছার বাইরে যাওয়ার সাধ্যি আমাদের নেই। সবাই একজন রবের কর্তৃত্বের কাছে পুরোপুরি দায়বদ্ধ।
.
বোন আমার, তোমার দেহ-মন সবই তাঁর মালিকানায়। তারপরও তুমি নিজেকে তোমার শত্রুর কাছে বিক্রি করে দিচ্ছ? তুমি তোমার শরীরে এমন এক কীটকে বিচরণ করতে দিচ্ছ, যা শরীরের স্রষ্টাকে ক্রোধান্বিত করে! শরীরটা যে জন্যে সৃষ্ট, তার বিপরীত কাজে তুমি ব্যবহার করছ!
.
তুমি হয়তো ভুলে যাচ্ছ, এ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আল্লাহর সৈনিক। আল্লাহই এগুলো সৃষ্টি করে তোমার অধীন করে দিয়েছেন। এরা সবাই মুসলিম। তোমার হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, ধমনি, শিরা-উপশিরা—সবই মুসলিম। তাই তো এরা প্রভুর আনুগত্যের মাধ্যমেই পরিচালিত হতে চায়। কিন্তু তুমিই এগুলোকে পাপাচারে অভ্যস্ত করছ। প্রতিটা অঙ্গের জন্যেই কিছু-না-কিছু বিধিনিষেধ আছে। হালাল হারামের বিষয় আছে।
.
কিন্তু তুমি প্রভুর সাথে বিদ্রোহ করে এ অঙ্গগুলোকে ঠেলে দিচ্ছ অবাধ্যতার দিকে। ওদেরকে দিয়ে আল্লাহর হুকুম-বিরোধী কাজ করতে বাধ্য করছ। ওদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও জোর করে ওদেরকে আল্লাহদ্রোহী বানাচ্ছ। তাই তো কল্যাণকর জিনিস দিয়ে উপকৃত হওয়ার সুযোগ থেকে আল্লাহ তোমায় বঞ্চিত করছেন। তুমি এখন আর সত্যকে উপলব্ধি করতে পারো না। ভালো উপদেশ শুনলে উশখুশ উশখুশ লাগে। কুরআনের বাণী কানে এলে দৌড়ে পালাতে ইচ্ছে করে। সালাত আদায় করার কোনো উৎসাহই বোধ করো না।
(হিজাব আমার পরিচয় থেকে খানিক অংশ)
…..
There are no reviews yet.