হতদরিদ্র
সাহাবিরা একদিন নবিজির মজলিসে বসা। দীনি বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। এমন সময় মজলিসে একজন লোক এলেন। এসেই অনুতাপের সুরে বললেন,
: ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি বরবাদ হয়ে গেছি। আমার ধ্বংস অনিবার্য।
নবিজি আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
: ব্যাপার কী বলো তো?
লোকটি লজ্জাবনত মস্তকে বললেন,
: রোজা অবস্থায় স্ত্রীর সাথে সহবাস করেছি।
নবিজি তখন ভেঙ্গে যাওয়া রোজার ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য জানতে চাইলেন,
: তুমি কি কোনো দাস মুক্ত করতে পারবে?
লোকটি অকপটে বললেন,
: না। পারব না।
নবিজি আবার জানতে চাইলেন,
: তাহলে কি লাগাতার দুইমাস রোজা রাখতে পারবে?
লোকটি কোনো রাখঢাক না রেখে জবাব দিলেন,
: না। এটাও পারব না।
নবিজি তৃতীয়বারের মত জানতে চাইলেন,
: তাহলে হয়তো ষাটজন মিসকিনকে খাবার খাওয়াতে পারবে। নাকি?
লোকটি এবারো নিজের অপারগতা স্বীকার করে বললেন,
: না। সেটাও পারব না।
এ পর্যন্ত জানার পর নবিজি চুপ করে থাকলেন। সাহাবিরাও চুপচাপ বসে থেকে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছিলেন। এমন সময় কোত্থেকে যেন এক টুপড়ি খেজুর হাদিয়া এলো। নবিজি আওয়াজ দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
: মাসালা জানতে চাওয়া লোকটি কোথায়?
নবিজির ডাক শোনা মাত্রই লোকটি গলা উঁচিয়ে বললেন,
: ইয়া রাসূলাল্লাহ! এই তো আমি।
নবিজি তখন বললেন,
: যাও, (ভেঙ্গে ফেলা রোজার কাফফারা স্বরূপ অন্তত) এই খেজুরগুলো নিয়ে কাউকে দান করে দাও।
হুজুরের কথা শুনে লোকটি আরজ করলেন,
: আপনি হয়তো আমার চেয়ে কোনো দরিদ্র লোককে দান করতে বলছেন। কিন্তু ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আল্লাহর কসম করে বলছি, পুরো মদিনায় আমার চেয়ে হতদরিদ্র আর কেউ নেই!
নবিজি তার কথা শুনে হেসে ফেললেন। যদ্দরুন নবজির পবিত্র দাঁত দেখা গেল। শেষমেশ নবিজি বললেন,
: ঠিকাছে, (শুধু তোমার জন্য এই কাফফারা মাফ।) এবার যাও, খেজুরগুলো নিয়ে পরিবারকে খাওয়াও।
তথ্যসূত্রঃ
বুখারি, সিয়াম অধ্যায়, হাদিস: ১৯৩৬।
মুসলিম শরিফ, হাদিস: ১১১১।
There are no reviews yet.