বিশ্ব আজ চরম ভাবে নেতা ও নেতৃত্বের সংকটে। আমরা সাধারণ দৃষ্টিতে নেতা ও নেতৃত্বকে একই সংজ্ঞায়িত করি। কিন্তু এর মধ্যে রয়েছে সূক্ষ্ম কিছু পার্থক্য। নেতা হলো একজন দিকনির্দেশক। আর নেতৃত্ব হলো লক্ষ্য অর্জনে কৌশল বাস্তবায়নে দুর্বার ছুটে চলা। এই নেতৃত্বের জন্য দরকার দক্ষতা, লক্ষ্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা, প্রভাবিত করার ক্ষমতা, আনুগত্য, বিশ্লেষণের ক্ষমতা, ভিশনারি হওয়া, আত্মবিশ্বাসী, সংকট মোকাবেলা, সমালোচনা গ্রহনের মানসিকতা ইত্যাদি।
এক শ্রেনীর কাছে বসের আবির্ভাব ঘটে। আমরা বস ও নেতা কে একই মুদ্রার এপিট ওপিট মনে করি। কিন্তু না। বস স্বৈরাচারী মনোভাবের হয়। সকল সফলতার ক্রেডিট নিজের করে নেয়। পক্ষান্তরে নেতা চায় নেতৃত্বের দক্ষতায় বলিষ্ঠ হতে। সামনে থেকে নিজে কাজ করে, কিন্তু সফলতার ক্রেডিট সবাইকে দেয়।
এই বিশ্বায়নের যুগে নির্দিষ্ট গন্ডিতে নেতৃত্ব দিলে চলবে না। তাই এই বইয়ে Global Leadership (বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব)নিয়ে বলা হয়েছে। যার বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তিনি রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রযুক্তি, শিক্ষা, গবেষনা বা অন্য যেকোন সেক্টরের নেতা হতে পারেন, কাজের পরিধি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ হতে পারে। কিন্তু যে বিষয়টি অবশ্যই থাকতে হবে, সেটি হচ্ছে বিশ্বের উল্লেখযোগ্য মানুষের নিকট গ্রহণযোগ্যতা। এধরনের নেতারা গ্লোবালি চিন্তা করে থাকে। গ্লোবাল লিডারের কিছু উদাহরণ হচ্ছে বারাক ওবামা, এরদোয়ান, স্টিভ জবক, এলান মাস্ক, জ্যাক মা ইত্যাদি।
এই বইয়ে বড় একটা অংশ আলোচনা হয়েছে ইসলামি নেতৃত্ব নিয়ে। মুসলিম নেতাদের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক। যেমন:- আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ, বিশ্বাস, জবাবদিহিতা, আনুগত্য, শরিয়তের অনুসরন ও অনুকরণ, সততা, দয়া, মানবসেবা, জ্ঞান, সাম্য, ধৈর্য, আত্ম নিয়ন্ত্রণ, আত্ম উপলব্ধি ইত্যাদি। বইয়ে আরো বিভিন্ন মনীষীদের দৃষ্টিতে নেতার গুনাবলি নিযো আলোকপাত করা হয়েছে।
সর্বশেষ বইয়ে, বিশ্ব নেতৃত্বে উল্লেখযোগ্য কিছু মডেলদের নিয়ে মৌলিক ধারনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, মুহাম্মদ (সঃ), খোলাফায়ে রাশেদার নেতৃত্ব, ইমাম গাজ্জালি, ইমাম ইবনে তাইমিয়া, জর্জ ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিংকন, নেলসন ম্যান্ডেলা, মাহাথির মুহাম্মদ, এরদোয়ান, সাইয়েদ কুতুব (রহঃ) ইত্যাদি।
নেতৃত্বের নানা শাখা- উপশাখা নিয়ে অতিত বর্তমান, ভবিষ্যৎ কে পাশাপাশি রেখে এই বইটি উপস্থাপনে এক অনন্য।
There are no reviews yet.