ঐতিহাসিকগণ লেখেন, ‘ইমাদউদ্দীন জেঙ্গী সুদর্শন ছিলেন। গায়ের রঙ ছিল হালকা বাদামি। চোখ দুটো ছিল বড় বড়; নীরব শান্ত সাগর যেন। একহারা লম্বা এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন।
তাঁর ব্যক্তিত্ব ও গাম্ভীযের্র প্রভাব এমন ছিল যে, তাঁর সামনে উঁচু আওয়াজে কথা বলার কারো হিম্মত হত না। তাঁর চোখে চোখ রেখে কথা বলার কেউ সাহস পেত না।
তাঁর নাম শুনেই বড় বড় অবাধ্য আমীররা পর্যন্ত ভয়ে মিঁইয়ে যেত। একবার এক প্রহরী পাহারারত অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়ে। ঘটনাক্রমে তখন ইমাদউদ্দীন জেঙ্গী পায়চারী করতে বের হন। তিনি সে প্রহরীর শিয়রের কাছে গিয়ে দাঁড়ান। প্রহরী চোখ খুলে ইমাদউদ্দীনকে তার সামনে দ-ায়মান দেখে বেহুঁশ হয়ে যায়। পরে লোকেরা হুঁশ ফেরানোর চেষ্টা করে। তবে ইতোমধ্যে তার প্রাণবায়ু বেরিয়ে গেছে।
৫১২ হিজরীতে সুলতান মাহমুদ সালজুকি ইমাদউদ্দীন জেঙ্গীকে মসুলের গভর্নর নিযুক্ত করেন। তার ঠিক একবছর আগে মসুলেই তাঁর পুত্রসন্তান জন্ম লাভ করে। তিনি পুত্রের নাম রাখেন নুরউদ্দীন। ইতিহাসে যিনি সুলতান নুরউদ্দীন জেঙ্গী নামে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন।
নুরউদ্দীন তাঁর জন্য সৌভাগ্যের সিতারা হয়েই উদিত হয়েছিলেন। কারণ তাঁর জন্মের মাত্র একবছরের মাথায় ইমাদউদ্দীন জেঙ্গী মসুলের গভর্নর নিযুক্ত হন। নুরউদ্দীনের মা ছিলেন মসুলের সাবেক গভর্নরের ছেলে নাসিরউদ্দীনের কন্যা।
সুলতান ইমাদউদ্দীনের দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন ছিল, তিনি অতীতে ইউরোপীয় ক্রুসেডাররা মুসলমানদের যে সমস্ত অঞ্চল ছিনিয়ে নিয়েছে, সেগুলো পুনরুদ্ধারের জন্য ময়দানে অবতীর্ণ হবেন।
There are no reviews yet.