‘শেষের অশ্রু’- বইয়ের কিছু অংশ
১.
“আমি তোমাকে মনে করিয়ে দিচ্ছি-শয়তান তোমার কাছে বিভিন্ন দরজা দিয়ে ঢুকবে। তবে প্রধানত নারীর মাধ্যমে ঢুকবে। তুমি তার থেকে দায়েমী যিকর, দৃষ্টি সংযত করা ও কুরআন তিলাওয়াত করার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাও।
নিজেকে মনে করিয়ে দাও, এই সুন্দরী মেয়ের চেহারা কিছুদিন পর একটা মৃতদেহে পরিণত হবে; যে দেহ কীটপতঙ্গ খেয়ে ফেলবে। আর জান্নাতে এমন হূরে ঈন আছে যাদেরকে উদীয়মান সূর্য দেখলেও লজ্জা পায়।”
২.
“কীভাবে ইউসুফ ধৈর্য ধরেছিলেন!
সব কিছুই তার কাছে কামনা করেছিল। চারদিকের দেয়াল, বন্ধ দরজা, আসক্ত নারী যে তার সর্বস্ব দিয়ে দিতে চায়— এরা সবাই তার কাছে কাকুতি করছিল, তার কাছে চাইছিল।
কিন্তু তিনি বলে দিলেন, না।
এত ঈমানী শক্তি কীভাবে ছিল তার?
নিশ্চয় তার অন্তরে যে শক্তি ছিল তা যে কোনো নারী সকল সৌন্দর্য, কূটকৌশল ও চক্রান্ত নিয়ে হাজির হলেও তাকে টলাতে পারত না এবং তার ক্ষতি করতে পারত না!
ইউসুফ তার অন্তরকে মুছে ফেলেছেন এই নারী থেকে। আর এক নতুন আলোয় তার অন্তরকে ভরে দিয়েছেন। যে আলোর উৎস আসমানে। তিনি যে আসমানেই উঠে চলেছেন। তিনি যমীনে ততটুকুই নামেন যতটুকু তাকে উঠতে সহায়তা করে।”
৩.
“আল্লাহর রহমতের দুয়ারগুলো সবসময় যে খোলা। দিনে-রাতে কখনও সেগুলো বন্ধ হয় না।
কোথায় তারা, যারা তাওবা করতে চায়? যারা ফিরে আসতে চায়? যারা পাপ কাজ করে অনুশোচনায় দগ্ধ? আসমান ও জমীনের রব তো রয়েছেন তাদেরকে ক্ষমা করার জন্য। তিনি তো বলেছেন, পাহাড়সম গুনাহ নিয়েও তাঁর কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি ক্ষমা করে দিবেন।”
৪.
একদল লোক পাহাড়ে উঠতে চাইল। তাদের কেউ শুরুতেই পাহাড়ের বিশালতা দেখে পিছু হটল। তাদের ইচ্ছাশক্তি প্রথমেই ক্ষয়ে গেল। আরেক দল লোক এক-চতুর্থাংশ যেতে না যেতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ল। কেউ কেউ অর্ধেক পৌঁছল। কিন্তু হোঁচট খেয়ে গড়িয়ে পড়ে গেল। আবার উঠে দাঁড়িয়ে নতুন করে পাহাড়ে উঠা শুরু করল। হয়তো একটু পরেই তার হিম্মত ফুরিয়ে যাবে। সে যেখানে হোঁচট খেয়েছিল সর্বোচ্চ সেখানেই যেতে পারবে।
সবচেয়ে সৌভাগ্যবান সেই— যে চূড়ায় আরোহণ করতে পারবে।”
৫.
“আগামীকালই তো আমরা মারা যাচ্ছি। আল্লাহর সামনে হিসাব দেওয়ার জন্য দাঁড়াবো। তিনি সব কিছুর হিসাব নিবেন। প্রতিটি পদক্ষেপের। প্রতিটি কথার। প্রতিটা গুনাহর। তখন অনেকে চিৎকার করে বলবে— হায়! আমাদেরকে যদি ফিরিয়ে দেওয়া হতো, তাহলে আমরা আমাদের রবের নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা বলতাম না।”
There are no reviews yet.